কীভাবে, কেমন শয্যায় শোবেন
নরম কোমল বিছানা নির্বাচন করা যেমন ঠিক নয়, তেমনি খুব শক্ত বিছানাও শরীরের জন্য ক্ষতিকর।
ক্লান্তি দূর করতে কখনো কিছুক্ষণের জন্য শুয়ে বিশ্রাম নেওয়া কিংবা সারা দিন পরিশ্রম করার পর রাতে কয়েক ঘণ্টা প্রশান্তির ঘুম পরবর্তী দিনে পুরোদমে কাজের স্পৃহা জোগায়। কিন্তু কতক্ষণ ঘুমাচ্ছেন, কীভাবে ঘুমাচ্ছেন ও কেমন বিছানায় ঘুমাচ্ছেন—এসব বিষয় স্বাস্থ্যের ওপর প্রভাব ফেলে। মানুষ সাধারণত কয়েকটি ভঙ্গিতে শুয়ে থাকে।
যাদের নিশ্বাস নিতে সমস্যা বা নাক ডাকার অভ্যাস রয়েছে, তাদের জন্য কাত হয়ে শোয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, এতে শ্বাস গ্রহণের পথ বেশি উন্মুক্ত থাকে। এ পদ্ধতিতে শোয়া মেরুদণ্ডের জন্য ভালো। এ ছাড়া পিঠের নিচের দিকের ব্যথা দূর করতেও কাত হয়ে শোয়া কার্যকর পদ্ধতি।
বিশেষজ্ঞদের মতে, বাঁ কাত হয়ে শোবার অভ্যাস করা ভালো। বাঁ কাত হয়ে ঘুমালে পাকস্থলী ও প্যানক্রিয়াস স্বাভাবিক অবস্থায় থাকতে পারে। এটা খাবার হজম ও মলত্যাগে সাহায্য করে। বাঁ কাতে শুয়ে ঘুমালে হার্টে রক্ত সঞ্চালন ভালো হয় ও হৃৎপিণ্ড ভালো থাকে। এসিডিটি তুলনামূলক কম হয়। এ পদ্ধতিতে ঘুমালে কিডনি, লিভার, গলব্লাডারের অবস্থান ঠিক থাকে। ফলে কিডনি ও লিভারে জমা বর্জ্য পদার্থ সহজে বের হতে পারে। বাঁ কাত হয়ে শুয়ে থাকলে লিভার ও গলব্লাডারের নিঃসরণও বাড়ে ও চর্বি কেটে যেতে সাহায্য করে। তবে যাঁদের হৃদ্রোগ, গ্লুকোমা ও শ্বাস-প্রশ্বাসজনিত কারণে ঘুমভঙ্গের সমস্যা রয়েছে, তাঁদের জন্য বাঁ কাত হয়ে ঘুমানো অনেক সময় হিতে বিপরীত হতে পারে। অন্যদিকে ডান কাতে শোবার কারণে হার্ট ফেইলিউর বা এসিডিটির মতো সমস্যাও দেখা দিতে পারে।
ঘুমের অন্যতম আরেকটি অভ্যাস হলো চিত হয়ে শোয়া। এতে মাথা সোজা থাকে ও শরীরের ভারসাম্য বজায় থাকে এবং শরীরের ভর সুষমভাবে বিভাজিত হয়। অনেকে এটিকে ঘুমানোর উত্তম পদ্ধতি বলে মনে করেন। বিছানায় দুই পা ছড়িয়ে চিত হয়ে শুয়ে থাকলে বা ঘুমালে দেহের যেকোনো স্থানের ব্যথার উপকার মিলবে। তবে চিত হয়ে শুলে অনেকের নাক ডাকার মতো ঘটনা ঘটে এবং স্থুল ও ‘স্লিপ অ্যাপনিয়া’ রোগীদের জন্য কষ্টকর। হৃদ্রোগীরাও চিত হয়ে শুতে আরাম বোধ করেন না।